পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালী শহরে রমজান মাসে গরিবের ইফতার আয়োজন করে আলোচনায় আসা মাহমুদুল হাসান রায়হানকে মারধর করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। শহরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পটুয়াখালীবাসী’ এই ইফতার আয়োজন করে, যা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত হয়েছে। ‘পটুয়াখালীবাসী’র আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান রায়হান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ইফতারের আগে সার্কিট হাউজ মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর মারধর করেন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর ও ৪/৫টি মোটরসাইকেলযোগে সেখানে আসেন। এবং সার্কিট হাউজের সামনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এসে আমাকে থাপ্পড় মারেন। আমাকেসহ ভলান্টিয়ারদের ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। ইফতারের কী অবস্থা জানি না। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রথমে তারা এসে বলে- তুই কী হয়ে গেছস? তোকে ফান্ড দেয় কে? তোমরা প্রোগ্রাম করো আমাদের জানাইছ? যুবক রায়হান জানান, এর পাঁচ মিনিট পর তারা আবার ঘুরে আসে। এসে কোনো কথা ছাড়াই মারধর শুরু করে। লাঠিসোটা ছিল না। হাত দিয়েই মারে। শুধু আমাকেই মারে। এ বিষয়ে আপনি কারও কাছে অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে রায়হান বলেন, অভিযোগ কার কাছে করব। যাকেই ফোন দিয়ে বলি, সেই বলে দেখছি। উনি তো আবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। জানা গেছে, ওই দিনের ইফতার আয়োজনে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান মৃধার মেয়ে শিল্পী। পটুয়াখালীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মানস চন্দ্র দাসও তিন দিন এ ইফতার আয়োজনে টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন। এরপরে ৫০ জনের ইফতার আয়োজন করার কথা ছিল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার দেওয়া টাকায়। মাহমুদুল হাসান রায়হান পটুয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স করেছেন। ছোটখাটো একটি চাকরি করেন এলাকায়। পাশাপাশি চালান এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। তবে হামলা বা মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, রায়হানের সঙ্গে সাবেক এক শিবির কর্মীর সখ্যতা আছে। সার্কিট হাউজের সামনে ইফতার আয়োজনে জহিরুল নামের ওই শিবিরকর্মীর সংশ্লিষ্টতার খবর পেয়ে সেখানে যান তিনি। তিনি আরও বলেন, তার ওপর হামলার কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। রায়হানকে বলেছি- খারাপ ছেলেদের যেন প্রশ্রয় না দেয়। পটুয়াখালীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মানস চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তিন দিন তাদের পাশে ছিলাম। উদ্যোগটা ভালো লেগেছে বলে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।’ ইফতার আয়োজনের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খবর নিচ্ছি।’
Leave a Reply